চ্যাট জিপিটি তো ভাই পুরা ইন্টারনেটে আগুন লাগিয়ে দিলো। বিগত কয়েক মাস ধরে ইন্টারনেট দুনিয়ে জুড়ে শুধু চ্যাটজিপিটি আর চ্যাটজিপিটি। অনেকে তো আবার চ্যাটজিপিটি দিয়ে হাগার হাগার ডলার ইনকাম এর পথ বলে দিচ্ছে। আমি আমার ব্যক্তিগত কাজে কিভাবে চ্যাট জিপিটি ব্যাবহার করি সেগুলার ভেতর থেকে ৫টি অসাধারণ ব্যাবহার আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি, আশা করি আপনাদের দৈনন্দিন ইন্টারনেট লাইফ আরও ইজি হবে।
আসলে চ্যাট জিপিটি রিসেন্টলি লঞ্চ হলেও GPT 3.0 কিন্তু বেশ আগে থেকে Research এর জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিলো। যদিও সেটার লিমিট ছিলো। আমার এখনো মনে আছে জখন প্রথমদিকে AI Written টুল গুলা মার্কেটে আসছিলো তখন থেকেই একটু আগ্রহী ছিলাম কিভাবে AI দিয়ে কন্টেন্ট ক্রিয়েশন করা জেতে পারে সে ব্যাপারে। তবে সব টুলের প্রিমিয়াম ভার্শন কিনে ব্যাবহার করার সুযোগ না হলেও বেশ কিছু টুল হাতে করে ব্যাবহার করে দেখেছি। বেশ অনেক কাজেই হেল্প করতো। তখনি জানতে পারি যে এগুলা সব ই ওপেন এআই এর GPT3.0 মডেলের ট্রেইন করা ভার্শন।
তখন কি এই GPT সেটা নিয়ে জানার আগ্রহ থেকে Open AI এর একাউন্ট করি এন্ড একটা কার্ড Add করে টেস্ট করা শুরু করি। এখন তো Card Add করা লাগে না আগে Mandatory ছিলো। যাইহোক একজনের দেখা টিউটোরিয়াল এর মতো করে বেশ অনেক কিছুই টেস্ট করি। বেশ ভালো লাগে।
এর পর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজে সেটা ইউজ করা হতো। তবে তার থেকে বেশি আমি অন্যান্য টুলসগুলাই ব্যাবহার করেছি। পরে জখন জিপিটি ৩.৫ মানে চ্যাট জিপিটি লঞ্চ হলো যেহেতু এই দুনিয়ায় কম বেশি চলাচল ছিলো, জানতে পারি এবং ব্যাবহার করতে শুরু করি বেশ ইন্টারেস্টিং লাগে এমন কি এটা লঞ্চ হওয়ার পর থেকে অন্যান্য AI Writing টুলস গুলার অপর থেকে মন উঠে জেতে শুরু করে।
এর কিছুদিনের মধ্যেই দেখি পুরা দুনিয়া জুড়ে চ্যাটজিপিটির আগুন লেগে গেছে। কেউ চ্যাট জিপিটি দিয়া ওয়েব সাইট বানিয়ে গেলে তো কেউ বিলিয়ন ডলার। সত্য বলতে আমি নিজেও এই চমৎকার টেকনোলজি নিয়ে বেশ নার্ভাস ছিলাম। আমি এসিও এবং ব্লগিং ইন্ড্রাস্টির সাথে যেহেতু বেশ ক বছর জড়িত তাই এটার একটা প্রভাব নিজের সেক্টরে পড়তে পারে বলে শঙ্কিত ছিলাম ইভেন এখনো আছি।
কিন্তু যেটা হবে সেটা পরে দেখা যাবে, ভয় পেলে তো আমাদের চলবে না তাইনা, নতুনকে হাসি মুখে বরন করে তো নিতে হবে। তাই আমার ডেইলি ড্রাইভার হিসাবে আমি কিভাবে চ্যাট জিপিটি কে আমার এসিস্ট্যান্ট হিসাবে ব্যাবহার করছি তা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি –
১. ইমেইল বা কভার লেটার রাইটিং:

ব্যক্তিগত কাজে আমাকে প্রায়শ ইমেইল বা জব কভার লেটার লেখা প্রয়োজন হয়ে থাকে। সেটা করতে বেশ অনেক খানিই হেল্প করে চ্যাটজিপিটি, জব পোস্ট খানা তাকে দিয়ে একটা সুন্দর ইনপুট দিতে পারলে বেশ সুন্দর একটা আউটপুট দেয় সে। তবে ChatGPT যেহেতু একটা বট, তাই সবসময় সব লেখা সঠিক হবে না এটাই স্বাভাবিক তবে ঘটে বুদ্ধি আছে বলতে হবে। আইমিন বেশ ভালোই শিখেছে। আপনি যদি ইমেইল বা CV, কভার লেটার নিয়মিত লিখে থাকেন তাহলে আপনার ডেইলি ড্রাইভার হিসাবে ইউজ করে দেখতে পারেন। অনেক কাজে দিবে।
২. মার্কেট রিসার্চ

আমি একজন ব্লগার এবং SEO freelancer তাই প্রাইশ আমাকে বিভিন্ন প্রয়োজনে Market research করা প্রয়োজন হয়।যেমন কোন City এর বা কোন sectior এর বিজনেসের কি কি প্রয়োজন হতে পারে, তাদের Keywords, তাদের লাইফ ইত্যাদি জিনিস নিয়ে Study করতে হয়। সেক্ষেত্রে আগে গুগল ঘেঁটে বেশ কয়েকটা ব্লগ পড়ে তারপর অনেকটা জানা যেতো কিন্তু এখন সেটা কয়েকটা Prompt দিলেই একটা ধারনা করা যাচ্ছে। যেটা আমার কাছে বশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে। আপনি জেই Sector এই হন না কেনো। এমন মার্কেট রিসার্চ এর জন্য চ্যাট জিপিটির হেল্প নিতে পারেন।
৩. ক্রিয়েটিভ কমেন্ট
অনেক সময় অনেকে অনেক বড় ব্লগ পোস্ট লিখে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক বড় পোস্ট Share করে। অনেক সময় আমার সেটা পুরা টা পড়ে দেখার সময় হয়ে উঠেনা অথচ তার সাথে Engage হতে হলে আমাকে কমেন্ট করতে হবে। আমি সেই লেখার লিঙ্ক এবং তারসাথে কমেন্টের ধরন বলে দিলে চ্যাট জিপিটি আমাকে কমেন্ট লিখে দেয় আমি সেগুলার ভেতর থেকে আমার যেটা প্রয়োজন সেটা কপি করে পেস্ট করে দেই।
তবে Open AI কিন্তু এই কপি আইডেন্টিফাই করার টুলস ও লঞ্চ করে ফেলেছে। তাই সিরিয়াস কাজে যেমন – কলেজ, ইউনিভার্সিটি, এক্সাম ইত্যাদি কাজে AI ক্রিয়েট করা কন্টেন্ট থেকে বিরত থাকুন।
৪. কন্টেন্ট আউটলাইন

আমি যেহেতু একজন ব্লগার আমাকে আমার ব্লগের জন্য কন্টেন্ট লিখতে হয় তাই, সেটার একটা সুন্দর আউটলাইন পেতে চ্যাটজিপিটি বেশ হেল্প করে আমাকে। আমার কন্টেন্ট টা কেমন হবে সেটার একটা সুন্দর Prompt দিলে সে সুন্দর একটা আউটপুট আমাকে দিয়ে দেয়। আপনার যদি কোন কন্টেন্ট ক্রিয়েশনের দরকার হয় তাহলে সেক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটির হেল্প নিয়ে দেখতে পারেন।
৫. কোডিং

যেহেতু ওয়েব নিয়ে কাজ করতে হয় তাই টুকটাক কোডিং করার প্রয়োজন য় হয়। যেমন অনেকগুলা লিঙ্কের হাইপার-লিঙ্ক করতে হবে, আমি জাস্ট-লিঙ্ক গুলা বটকে দিয়ে কমান্ড দিলেই সে করে দিচ্ছে। আবার একটি পোস্টের জন্য স্কিমা Mark-Up করতে হবে সেটার লিঙ্ক দিয়ে সিচুয়েশন বলে দিলে সেটাও সে করে দিচ্ছে। তবে সে কিন্তু বেশ ভুল করে তাই আপনার যদি ব্যাসিক ধারনা না থাকে তাহলে আপনার জন্য অতটাও ইফেক্টিভ হবে বলে মনে হয় না। ট্রাই করে দেখতে পারেন।
এছাড়াও নানা কাজে চ্যাটজিপিটি এখন আমার ডেইলি ড্রাইভার হিসাবে কাজ করছে। নতুন নতুন কন্টেন্ট আইডিয়া থেকে শুরু করে কুকুর বিড়ালের নাম পর্যন্ত সে সুন্দর করে সাজেস্ট করছে। তবে তাকে সঠিকভাবে চালনো শিখতে হবে তা না হলে সে সুধু ভুল তথ্য দিবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে আগামী মার্চ মাসে বিং সার্চ ইঞ্জিনে এই চ্যাটজিপিটি ইন্টিগ্রেশনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে গুগল তাদের Bard AI লঞ্চের য় ঘোষণা দিয়েছে ।
BarD AI নিয়ে আমরা আরেকটি লেখায় আলোচনা করবো। আজ আই পর্যন্ত ই। কথা হবে পরবর্তী লেখাতে। তবে আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনে কিভাবে চ্যাট জিপিটি ব্যাবহার করছে সেটা কিন্তু আমাদের জানাতে একদমই ভুলবেন না। ধন্যবাদ 😉
1 thought on “চ্যাটজিপিটির ৫ টি অসাধারণ ব্যাবহার যেগুলা আমি নিয়মিত ব্যাবহার করি।”